বিভিন্ন সম্রাটকে পাঠানো রাসূলের (সা.) চিঠি

আবদুল্লাহ তামিম, আল-আরাবিয়া অবলম্বনে ।।

ইসলামের দাওয়াত দিয়ে তৎকালীন পারস্যসহ বিভিন্ন দেশের বাদশাহর কাছে চিঠি লিখেছিলেন শেষ নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আরব উপদ্বীপের বাইরে রাজা ও বাদশাহদের ইসলামে দাওয়াত দেওয়ার জন্য একাধিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন।

হিজরি ষষ্ঠ বছরে মিশরীয় শাসক আল-মুকাওকিসের কাছে প্রেরিত একটি চিঠিতে নবী (সা.) তাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন। বলেছিলেন যে, তিনি যদি মুসলমান হন তবে আল্লাহ তার পুরস্কার দ্বিগুণ করে দেবেন। নবী কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনের সূরা আলে ইমরানের কয়েকটি আয়াত উদ্ধৃত করেছিলেন।

আমি তোমাদের নিকট এসেছি তোমাদের পালনকর্তার নিদর্শনাসহ। কাজেই আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুসরণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার পালনকর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা। তাঁর ইবাদাত কর, এটাই হলো সরল সঠিক পথ।

নবী কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইথিওপিয়ার সম্রাট আশামা ইবনে আবজার, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সম্রাট হেরাক্লিয়াস, পারস্যের রাজা মুসির ইবনে সাওয়া, ইয়েমেনের রাজপুত্র হিমায়ারি হরিথ, এবং হরিথ গাসানিকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। শামের রাজ্যপাল এর নিকটও চিঠি পাঠিয়েছিলেন।

বাদশাহ ও রাজকুমারদের ইসলাম অনুসরণের আমন্ত্রণ জানিয়ে নবীর চিঠিগুলি এই বিবৃতি দিয়ে শেষ করা হয়েছিল, যদি মুখ ফিরিয়ে নেওয়া হয় তবে আপনি আপনার অনুসারীদের পাপ বহন করবেন।

খসরু পারভেজ বা কিসরা আবরুভেজ ছিলেন স্যাসানীয় সাম্রাজ্যের শেষ মহারাজা যিনি ৫৭৯ সাল থেকে ৬২৮ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। নবী কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে চিঠি পাঠালে সে নবীর চিঠিটি ছিঁড়ে ফেলেছিল। শুধু তাই না, সে ইয়েমেন নিযুক্ত শাসক বাযানকে হিজায থেকে মুহাম্মাদকে (সা.) বন্দী করে আনার জন্য দুজন লোক পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

ইত্যবসরে, দূত আব্দুল্লাহ ফিরে এসে নবী মুহাম্মাদকে সব ঘটনা খুলে বললে নবী মুহাম্মাদ খসরু পারভেজের ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী প্রদান করেন। পরবর্তীতে, নিজ পুত্র দ্বিতীয় কাভাধ কর্তৃক খসরু পারভেজ মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত হয়।রাসুলের (সা.) এ চিঠিগুলো এখনো সংরক্ষিত আছে। এরমধ্যে কয়েকটি চিঠি ইস্তাম্বুল জাদুঘরে রাখা হয়েছে। সৌদি আরবের মদিনা জাদুঘরেও কয়েকটি চিঠির মূল অনুলিপি রাখা আছে।

 23,763 total views,  2 views today


মন্তব্য (০ টি)

মন্তব্য করুন