ডা. হাফেয ফেদাউর রহমান ।।
[পাকিস্তানের পাঞ্জাবে কাদিয়ানীদের মূল কেন্দ্র চনাবনগর ‘ফযল ওমর হাসপাতাল’-এর ডাক্তার হাফেয ফেদাউর রহমান ২৯ মে ১৯৮২ ঈসাব্দে নিজ পরিবারের সাতজন সদস্যসহ মজলিসে তাহাফফুযে খতমে নবুওত চনাবনগর মারকাযে এসে ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি ডেরা গাযী খানের অন্তর্গত রান্দান কোট চটের বাসিন্দা। ভাওয়ালপুর কায়েদে আযম মেডিকেল কলেজ থেকে তিনি এমবিবিএস পাস করেন। দু’বছর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চাকরি করেন। খায়েরপুরে মেডিকেল অফিসাররূপেও দায়িত্ব পালন করেন। এরপর নিজ জামাতের নির্দেশ অনুসারে চনাবনগর ফযল ওমর হাসপাতালে চলে আসেন।
তিনি তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য- তাহেরা ফেদা, সফিয়্যা নায, আল্লাহ নওয়ায, রব নওয়ায, শাহেদ নওয়ায, হামীদা নাযসহ ইসলামে দীক্ষিত হন। যার খবর প্রভাবশালী সকল পত্রিকা ফলাও করে প্রচার করে। ডাক্তার সাহেব তার কাদিয়ানিবাদ থেকে তওবার কারণ সম্বলিত এ লিখিত বিবৃতি দৈনিক ‘নাওয়ায়ে ওয়াকত’ পত্রিকায় ছাপতে দেন।]
আমি একজন বংশগত কাদিয়ানী ছিলাম। এককালে আমার বংশের পূর্বপুরুষরা ডেরা গাযী খান থেকে পায়ে হেঁটে কাদিয়ানে এসে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর হাতে বাইআত হয়েছিল। তারপর সেই মুরব্বীরা নিজেদের প্রত্যেক ভবিষ্যত বংশধরকে কাদিয়ানিবাদের পক্ষে এবং হুযুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুওতের বিরুদ্ধে ঘৃণার তালিম দিত।
এ সমাজের ছেলে-মেয়েদেরকে বাল্যকালেই রবওয়ার (বর্তমান নাম চনাবনগর) জামেয়া আহমদিয়াতে ভর্তি করিয়ে শেষ অবধি পড়াশোনা করানো হয়। এই জামেয়া আহমদিয়ার শিক্ষাব্যবস্থাই এমন যে, শিক্ষার্থীরা কাদিয়ানিবাদ ছাড়া অন্য কিছু বুঝতে পারে না। যদি কোনো ছেলে বোঝার চেষ্টাও করে, তবু তা কোনো কাজে আসে না। কারণ, তাদেরকে এমন সব দায়িত্ব সোপর্দ করা হয়, যা তাদের চিন্তাশক্তিকে অকেজো করে ফেলে। ফলে তারা প্রথাগত গণ্ডিতেই আবদ্ধ হয়ে যায়।
কাদিয়ানীদের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয় চনাবনগর থেকে। যার শাখা-প্রশাখা বাইরের অন্যান্য দেশেও রয়েছে। এর অধীনে মিশনারী কার্যক্রমও পরিচালিত হয়। বিদেশিরাও এ ব্যধিতে আক্রান্ত। এভাবে যত মানুষ বংশগত কাদিয়ানী অথবা নতুন করে কাদিয়ানী হয়, তাদের সমস্ত বিষয়-সম্পদ, চাকরি-বাণিজ্য, রুজি-রোজগার, সন্তানের লালন-পালন, শিক্ষাদীক্ষা সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
সমস্ত কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের আঙ্গুলের ইশারায় পরিচালিত হয়। মানুষের কাছ থেকে ওরা ‘জীবন ওয়াকফের’ ফরম পূরণ করিয়ে নেয়। এর ফলে নিরীহ লোকজন আজীবনের জন্য ওদের টাকায় কেনা গোলামে পরিণত হয়। এহেন পরিস্থিতিতে এ বেচারারা শরীয়তে মুহাম্মদী কী জানবে, কী বুঝবে! বাস্তব অর্থেই তখন তাদের হাত-পা বাঁধা হয়ে যায়।
আরেকদল সরলমনা শিক্ষিত লোককে বিয়ের প্রলোভন, বিদেশ পাঠানোর প্রস্তাব, নগদ আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়ে ইসলাম থেকে বের করে নিয়ে যায় (নাউযুবিল্লাহ)। যদি আমি এসবের বৃত্তান্ত সারা জীবনও লিখে যাই, তবুও তা শেষ হবে না। আমি চনাবনগরে এসে কাছ থেকে এসব অনাচার প্রত্যক্ষ করেছি। পরিণামে আমি কাদিয়ানী ধর্মমত ত্যাগ করেছি।
আমার কলম এ লোকের (মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর) যথাযোগ্য নাম- ‘দাজ্জাল’ (মহাপ্রতারক)-ই দিতে পারে। এ দাজ্জালের নবুওত দাবি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত লিখিত সমস্ত গ্রন্থ হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে অবমাননার স্তূপ। ভাবতে অবাক লাগে, এক জীবনে একজন মানুষ কতগুলো দাবি করে রেখেছে! যা আগাগোড়া ভুয়া ও ভিত্তিহীন। উদাহরণস্বরূপ-
১. এই দাজ্জাল নিজে খোদার স্ত্রী হওয়ার মতো জঘন্য দাবি করেছে। ১
২. এক গলতি কা ইযালার টীকায় লিখেছে- কাশ্ফে (অতিজাগ্রত স্বপ্নে) হযরত ফাতেমা আমার মাথা তাঁর উরুদেশে রেখেছেন।২ (নাউযুবিল্লাহ)
৩. আমি ঈসা আলাইহিস সালাম।৩ (নাউযুবিল্লাহ)
৪. এমন উচ্চস্তর এবং কামালাত আমি লাভ করেছি যে, আমাকে খোদা মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাঁধ বরাবর এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন।৪ (নাউযুবিল্লাহ)
৫. আমি আমার যুগের নবী। ৫ (নাউযুবিল্লাহ) তার সমস্ত বই-পত্র এজাতীয় গর্হিত ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দ্বারা রচিত।
এসব কারণে আমি গোপনে অসংখ্য ঐতিহাসিক ও আরবী কিতাব, সীরাত এবং কুরআনের তাফসীর অধ্যয়ন করি।
আমি মনে মনে ভাবলাম এবং অনেক চিন্তা-বিশ্লেষণের পর সিদ্ধান্তে পৌঁছলাম যে, জীবন একটি, অথচ দাবি একাধিক। এ ধরনের বহুরূপী লোক কখনো সৎ মানুষ হতে পারে না। এজন্য আমি (কাদিয়ানীদের তৃতীয় খলিফা ও মির্যা কাদিয়ানীর নাতি) মির্যা নাসেরকে এ মর্মে একটি চিঠি লিখি যে, আমি খতমে নবুওত সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। আপনি আমাকে উত্তর দিন। তিনি তখন (তার ভাই ও পরবর্তীতকালীন খলিফা) মির্যা তাহেরকে লিখলেন যে, মনে হচ্ছে আমাদের একজন স্থায়ী সদস্য বিচ্যুত ও হাতছাড়া হওয়ার আশংকা দেখা দিচ্ছে। আপনি দ্রুত তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ল-ন অথবা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার প্রস্তাব করুন।
মির্যা তাহের গোপনে আমাকে ডেকে একান্তে সাক্ষাৎ করে। আমার প্রশ্ন শোনার পরিবর্তে সে আরো সুযোগ-সুবিধা এবং বিভিন্ন প্রলোভনের কথা বলতে থাকে। আমি অনেক চেষ্টা-প্রয়াসের পর অবশেষে কয়েকটি প্রশ্ন করেই ফেলি। সে কোনো উত্তর দিতে পারে না। আমি তাদের ‘দারুয যিয়াফাতে’ (মেহমানখানায়) মির্যা কাদিয়ানীকে ইসলাম বহির্ভূত, প্রতারক, দাজ্জাল প্রভৃতি শব্দ বলে উঠে দাঁড়াই। আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করি যে, হে পরাক্রমশালী রব! আমাকে সরল পথ দেখান!
রাতে স্বপ্নযোগে আমি একজন নেক বুযুর্গের ইশারা পাই। আমি নিজ কানে শুনতে পাই-
قولوا لا إله إلا الله محمد رسول الله
(বলো, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ!) এ আওয়াজ শোনার পর আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করি যে, এখন আমার মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে যেতে বিলম্ব করা সমীচীন হবে না। এখনই ইসলাম গ্রহণ করে নেওয়া উচিত। যখন আমার পরিবারের লোকজন অর্থাৎ, আমার স্ত্রী তাহেরা ফেদা, ছোট শ্যালক, শ্বশুর প্রমুখ এ স্বপ্ন এবং সার্বিক অবস্থা জানতে পারেন তখন সকলেই নিজের আখেরাতের নাজাতের জন্য তৈরি হয়ে যান।
আমি পরিবারের ব্যাপারেও আশ্বস্ত হওয়ার পর আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করে সোজা মজলিসে তাহাফ্ফুযে খতমে নবুওত চনাবনগরের মসজিদে মুহাম্মাদিয়া রেলওয়ে স্টেশন গিয়ে পৌঁছি। সেখানে কারী শাব্বির আহমদ, মাওলানা আহমদ ইয়ার চারয়ারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। এ বুযুর্গদের সঙ্গে আমি মজলিসে তাহাফ্ফুযে খতমে নবুওতের আরেকটি মারকায মুসলিম কলোনিতে মাওলানা আল্লাহ ওয়াসায়া সাহেবের নিকট উপস্থিত হই। (সৌভাগ্যক্রমে) সেখানে আল্লামা মাওলানা মুহাম্মাদ লোকমান আলিপুরী, মাওলানা খোদা বখশ শুজাবাদীও উপস্থিত ছিলেন। এ বুযুর্গদের উসিলায় আমি ইসলামের দৌলতে ধন্য হয়ে ঘরে ফিরে আসি।
মজলিসে তাহাফ্ফুযে খতমে নবুওতের মুবাল্লিগ মাওলানা আহমদ ইয়ার নকশেবন্দী তার বাড়িতে আমাকে সপরিবারে থাকার ব্যবস্থা করেন। রাতে মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আমি আল্লাহ তাআলার ফযল ও করমে মাহফিলে উপস্থিত আমার মুসলমান ভাই-বোনদের উদ্দেশে আল্লাহ তাআলাকে সাক্ষী রেখে নিজের ইসলামগ্রহণের ঘোষণা দেই। আমার বক্তব্যের সারসংক্ষেপ ছিল এই-
“উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার ঈমান এ ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত যে, হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার আখেরি নবী ও রাসূল। তাঁর পরে নবুওত ও রিসালাতের দাবিদার, ওহীর সিলসিলা জারি থাকার প্রবক্তা মিথ্যাবাদী, দাজ্জাল এবং ইসলামী দণ্ডবিধির আলোকে মৃত্যুদণ্ডের আসামী।
হযরত সিদ্দীকে আকবর রা.-এর যুগে উম্মতে মুহাম্মাদীয়ার সর্বপ্রথম এ বিষয়ে ইজমা হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরে যে কোনো ধরনের নবুওতের দাবিদার মিথ্যবাদী, কাফের এবং হত্যার উপযুক্ত। (তাকে মুরতাদ হিসেবে হত্যা করা মুসলিম শাসকের দায়িত্ব।) হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরে প্রথম জিহাদ নবুওতের মিথ্যা দাবিদার মুসায়লামা কায্যাবের বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছে।
ভারত উপমহাদেশে ঔপনিবেশিক শক্তির মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতায় মহাপ্রতারক মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী নবুওতের দাবি করেছে। সে নবুওতের দাবির সঙ্গে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম, সাহাবায়ে কেরাম রা., আহলে বাইত (নবী পরিবার), সাধারণ মুসলমান- সকলের বিরুদ্ধে প্রচুর কুৎসা, অপবাদ ও গালাগাল করেছে এবং তার অমান্যকারীদের কাফের ও ইসলামের গণ্ডি থেকে খারিজ আখ্যা দিয়েছে।৬
যার প্রেক্ষিতে মুসলিম উম্মাহ সর্বসম্মতিক্রমে তাকে কাফের সাব্যস্ত করেছে। ইসলামের কবি আল্লামা ইকবাল রাহ. শুধু এ ফতোয়ার সমর্থন করেছেন তা-ই নয়; বরং তৎকালীন সরকারের নিকট কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা দেয়ার দাবিও জানিয়েছিলেন।
আমি শোকর আদায় করছি যে, পাকিস্তানের ইসলামী জনতার সংগ্রাম সফল হয়েছে। ১৯৭৩ সালের আইন সংশোধনের মাধ্যমে ৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল এসেম্বলি মির্যা গোলাম আহমদের অনুসারী- কাদিয়ানী ও লাহোরী উভয় গ্রুপকে অমুসলিম সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা প্রদান করেছে।
সরকারের প্রতি আমার আবেদন, কাদিয়ানীদের অন্যায় ও প্রতারণার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন। মুসলমান ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা সরলমনা জনগণকে কাদিয়ানীদের ফাঁদ থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করুন। দুআ করি, সত্যের আওয়াজ প্রতিষ্ঠিত হোক। মিথ্যার অন্ধকার অপসৃত হোক। আমার জন্য দুআ করবেন, আল্লাহ তাআলা যেন আমাকে দ্বীনের খেদমতের তাওফীক এবং অবিচলতা দান করেন- আমীন।
ভাষান্তর ও টীকা : মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম
১. মির্যা কাদিয়ানীর একজন বিশিষ্ট ‘মুরীদ’ (কাদিয়ানীদের বিশ্বাসমতে যে সাহাবী হওয়ার মর্যাদা রাখে, নাউযুবিল্লাহ) কাযী ইয়ার মুহাম্মাদ- যার সম্পর্কে খোদ মির্যা কাদিয়ানীর কয়েকটি প্রশংসা বাক্য হল- ‘অত্যন্ত মুখলিস, নিবেদিত ও কপটহীন মানুষ।’ ‘মেহনত ও সততার সঙ্গে কর্মসম্পাদনকারী ব্যক্তি।’ ‘সাহাবাদের সুন্নতের একটি অংশ রয়েছে তার মধ্যে।’ (দেখুন, মির্যা কাদিয়ানীর মালফূযাত [নতুন সংস্করণ] ৪/৪৮৪)
এরূপ একান্ত শিষ্য তার গুরুর সূত্রে নিজের বই ‘ইসলামী কোরবানি’তে লিখেছে- ‘হযরত মাসীহে মাওউদ (প্রতিশ্রুত মাসীহ) একবার নিজের এই অবস্থার উল্লেখ করেছেন যে, কাশফের হালত তার উপর এমনভাবে সৃষ্টি হয় যে, মনে হয় তিনি স্ত্রী। আর আল্লাহ তাআলা তার ওপর পৌরুষশক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। বুদ্ধিমানদের জন্য ইঙ্গিতই যথেষ্ট।’ -ইসলামী কোরবানি পৃ. ১২। (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন!)
২. এক গলতি কা ইযালার টীকা, রূহানী খাযায়েন ১৮/২১৩, (বাংলা অনুবাদ) একটি ভুল সংশোধন পৃ. ১১; তোহফায়ে গোলড়বিয়া, রূহানী খাযায়েন ১৭/১১৮; আয়নায়ে কামালাতে ইসলাম, রূহানী খাযায়েন ৫/৫৫০
৩. দেখুন, ইযালায়ে আওহাম, রূহানী খাযায়েন ৩/১২২, ৪৬৩; ইতমামুল হুজ্জাহ, রূহানী খাযায়েন ৮/২৭৫; আরবাঈন-৪, রূহানী খাযায়েন ১৭/৪৫৪; এক গলতি কা ইযালা, রূহানী খাযায়েন ১৮/২১০, (বাংলা অনুবাদ) একটি ভুল সংশোধন পৃ. ৮; আয়নায়ে কামালাতে ইসলাম, রূহানী খাযায়েন ৫/৫৫১; কিশতিয়ে নূহ, রূহানী খাযায়েন ১৯/৫০, ৫১; কিশতিয়ে নূহ [বাংলা] পৃ. ৬৪-৬৫
৪. উল্লেখ্য, এখানকার এই বক্তব্যটি মূলত মির্যা কাদিয়ানী সম্পর্কে তার পুত্র বশীর আহমদ এম এ প্রদান করেছিল। দেখুন তার রচিত কালিমাতুল ফছল পৃ. ২৩।
স্বয়ং তার পিতা মির্যা গোলাম আহমদও নিজে হুবহু ‘মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ’ হওয়ার দাবি করেছে। দেখুন মির্যা কাদিয়ানীর এক গলতি কা ইযালা, রূহানী খাযায়েন ১৮/২০৭, ২১২, ২১৫, ২১৬; একটি ভুল সংশোধন পৃ. ৪, ১০, ১৪, ১৫; খোতবায়ে ইলহামিয়া ১৬/২৫৯।
তার অনুসারীরাও তাকে মান-মর্যাদা, শান ও মহত্ত্বে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমপর্যায়ের বলে বিশ্বাস করে। দেখুন, তাদের মুখপত্র আলফযল ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯১৫ ঈ., কলাম ২, পৃষ্ঠা ৭।
শুধু তা-ই নয়; মির্যা কাদিয়ানীর দাবি হল, তার রূহানিয়াত ও আধ্যাত্মিকতা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রূহানিয়াত ও আধ্যাত্মিকতার চেয়ে অধিক পূর্ণাঙ্গ ও প্রবল। দেখুন তার রচিত খোৎবায়ে ইলহামিয়া, রূহানী খাযায়েন ১৬/২৭০, ২৭১, ২৭২
অতএব, উপরোল্লিখিত বক্তব্যটি মির্যাপুত্র বশীর আহমদের হলেও এটি তার পিতার একাধিক বক্তব্যের প্রতিপাদ্য এবং গোটা কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্বকারী।
৫. মির্যা কাদিয়ানীর নবী ও রাসূল দাবির জন্য দেখুন- দাফেউল বালা [উর্দু], রূহানী খাযায়েন ১৮/২৩১; দাফেউল বালা [বাংলা] পৃ. ১২; মালফূযাত [পুরাতন সংস্করণ] ১০/১২৭; [নতুন সংস্করণ] ৫/৪৪৭; তাতিম্মায়ে হাকীকাতুল ওহী, খাযায়েন ২২/৫০৩; এক গলতি কা ইযালা, রূহানী খাযায়েন ১৮/২০৭, ২১০; একটি ভুল সংশোধন, পৃ. ৪, ৮; নবুওত ও খিলাফত [বাংলা] পৃ. ৭৬, ৭৭
৬. দেখুন, মির্যা কাদিয়ানীর নবীগণের অবমাননা- তাতিম্মায়ে হাকীকাতুল ওহী, রূহানী খাযায়েন ২২/৫৭৫; বারাহীনে আহমদীয়া-৫, রূহানী খাযায়েন ২১/৯৯
সাহাবায়ে কেরাম ও আহলে বাইতের বিরুদ্ধে অপবাদ- যমীমায়ে বারাহীনে আহমদীয়া-৫, রূহানী খাযায়েন ২১/২৮৫; (বাংলা) একটি ভুল সংশোধন পৃ. ১১; ই’জাযে আহমদী, রূহানী খাযায়েন ১৯/১৯৩; দাফেউল বালা, রূহানী খাযায়েন ১৮/২৩৩, (বাংলা অনুবাদ) দাফেউল বালা পৃ. ১৪
সাধারণ মুসলমান ও ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও ভয়ংকর গালাগালি- তাতিম্মায়ে হাকীকাতুল ওহী, রূহানী খাযায়েন ২২/৪৪৫; হুজ্জাতুল্লাহ, রূহানী খাযায়েন ১২/২৩১-২৪৩; নাজমুল হুদা, রূহানী খাযায়েন ১৪/৫৩
স্বীয় অমান্যকারীদের কাফের আখ্যাদান- তাযকিরা ৪র্থ সংস্করণ, পৃ. ৫১৯; নুযূলুল মাসীহ, রূহানী খাযায়েন ১৮/৩৮২
সৌজন্যে : islamtime24.com, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
36,959 total views, 24 views today
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।
মন্তব্য (০ টি)